সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক

আজকে যাদের নিয়ে আলোচনা হবে তারা হলেন সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক। একজন স্যার, আরেকজন ম্যাম।

কারা এই সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক?

এই দুই জন সামাজিক শিক্ষক হলেন ইমাম হোসেন ও মুনজেরিন শহীদ। এই দুই জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমের শিক্ষকের গল্প হবে আজ। তারা কীভাবে আসীন হলেন এই সামাজিক মাধ্যমের শিক্ষক রূপে?

যারা আমরা স্যোসাল মিডিয়া ব্যবহার করি, তারা নিশ্চয়ই এই দুই ইংরেজি শিক্ষকের দেখা মিলেছে। দুই জনেরই বিষয় ইংরেজি শেখানো মানুষের।

আমরা সেই ক্লাস ওয়ান থেকেই ইংরেজির সাথে পড়ে আছি। কিন্তু বিদেশি ভাষা হওয়ায় অনেকের এর সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠেনি।এদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই ইংরেজিতে দুই কলম লিখতে পারলেও ইংরেজিতে কথা বলায় তাদের অনেক সীমাবদ্ধতা।আবার আমরা আমাদের দেশের জন্য আলাদা ইংরেজির উচ্চারণ ব্যবস্থা তৈরি করে নিয়েছি। যেটা কোন দেশের ইংরেজির সাথে মিলে না।

আমরা অনেকে অনেক ইংরেজি শব্দের অর্থ জানা স্বত্ত্বেও স্পোকেন টা হয়ে ওঠে না। কারণ, আমাদের অধিকাংশ স্কুল কলেজে এই চর্চা অনেক টাই কম।

এই সীমাবদ্ধতা কে জয় করার জন্যে ইমাম হোসেন ও মুনজেরিন শহীদ কাজ করে যাচ্ছেন।

ইমাম হোসেন পুলিশ সদস্যদের সাথে
ইমাম হোসেন পুলিশ সদস্যদের সাথে, ছবিঃ ফেসবুক

সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক ইমাম হোসেন। তাঁর আছে ইংরেজি শেখানোর জন্য আছে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান হেডম্যান একাডেমি। এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা ২০১৮ সালে। এই হেডম্যান একাডেমির ফেসবুক থেকেই ভিডিও আপলোড দেন ইমাম হোসেন। তিনি মূলত জোর দেন ইংরেজি উচ্চারণের দিকে। আমরা যে ভুলভাল ইংরেজি উচ্চারণ করি, সেটা আসলে সঠিক কিভাবে হবে সেটার উচ্চারণ শেখান  মজার ছলে।

ইমাম হোসেনের দুই জন প্রিয় স্টুডেন্ট আছে ওয়ালিয়া আর ওয়াজিয়া। তারা বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে ইংরেজি উচ্চারণ ও বাক্য গঠন শেখান। যেসব কমন কথা বার্তা আমরা বলি, সেগুলো ইংরেজি আরও অনেক ভাবে বলা যায় এটা খুবই সুন্দর ভাবে বোঝান ইমাম হোসেন ও তার টিম(স্টুডেন্টসরা)। 

এছাড়াও বাচ্চাদের নিয়ে নিয়মিত লাইভ করেন ইমাম হোসেন। সেখানে খুবই প্রাণোচ্ছল ও আনন্দের মাঝে ছোট ছোট বাচ্চারা গ্রামার ও স্পোকেন শিখে। হেডম্যান একাডেমির ফেসবুক পেজ এখন এক মিলিয়নেরও অধিক ফলোয়ারস।

এছাড়াও তিনি কাজ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সাথে। ইংরেজি শিখিয়েছে পুলিশ, আর্মি, বিসিএস ক্যাডার সহ আরও অনেক সরকারি ও কর্পোরেট মানুষদের।

আগে ইমাম হোসেন ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। করোনার ছোবলে সে যাত্রায় হয়তো কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে, কিন্তু তিনি ছড়িয়ে গেছেন দেশ জুড়ে।

ইমাম হোসেনের বিখ্যাত ডায়লগ, “নাকসা ফাটায়ে দিমু!”

হেডম্যান একাডেমির ফেসবুক পেজ

মুনজেরিন শহীদ -সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক
মুনজেরিন শহীদ, ছবিঃ ফেসবুক

এবার আসা যাক সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক মুনজেরিন শহীদের গল্পে। মুনজেরিন পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। এখান থেকে এম.এ করার পর পাড়ি জমিয়েছেন সুদুর ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউভার্সিটিতে।

মুনজেরিন কাজ করতেন বাংলাদেশের অন্যতম অনলাইন শিক্ষার প্লাটফর্ম টেন মিনিট স্কুলে। সেখানে প্রথমে ব্লগ লিখতেন ও মানব সম্পদ বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। ক্যামেরার পড়ালেখা করানোর থেকে ধুরে থাকতেন।

এই করোনা যুগে ঘরে বসে বিরক্ত হতে হতে একদিন করে ফেললেন ইংরেজি শেখার এক ভিডিও। কিন্তু আপলোডের পরে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেলেন মুনজেরিন শহীদ। এরপর থেকে নিয়মিত ভিডিও করতে থাকেন মুনজেরিন।

মুনজেরিনের লক্ষ্য কীভাবে প্রাত্যহিক কথা গুলো আমরা ইংরেজিতে বলতে পারি। যেমনঃ কীভাবে আত্মীয়ের সাথে ইংরেজিতে কথা বলা যায়, কীভাবে ইন্টারভিউ তে ইংরেজি ফেস করতে হয়, কীভাবে প্রেজেন্টেশন দিতে হয় ইংরেজিতে; এরকম নানা বিষয়ে ভিডিও বানান মুনজেরিন। আর এসব ভিডিও মানুষ মন্ত্র-মুগ্ধের মত দেখে মানুষ। তার সাবলীল উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গির কারণে মানুষ আরও বেশি মনোযোগ ধরে রাখতে পারে।

অক্সফোর্ডে থাকলেও জড়িত আছে টেন মিনিট স্কুলের সাথে। যেখানেই থাকেন নিয়মিত ভিডিও আপলোড করেন ফেসবুক, ইউটিউবে।

মুনজেরিনের ঘরে বসে Spoken English বহুল বিক্রিত ও আলোচিত বই। রকমারিতে বহুদিন এটা বেস্ট সেলার বই ছিল। মুনজেরিনের কোর্স গুলো পাওয়া যাচ্ছে এখন ১০ মিনিট স্কুলে। সেখানেও তাঁর শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক।

এ পর্যন্ত ঘরে বসে Spoken English কোর্সে অংশ গ্রহণ করেছে 66,000+ শিক্ষার্থী।

মুনজেরিন শহীদের ফেসবুক পেজ

মুনজেরিন শহীদের কোর্স ও বই

আমাদের অনেক কিছুরই ডিজিটালাইজেশন হয়েছে। সেই সাথে করোনার শিক্ষার তথা এই ইংরেজি শিক্ষার যে ডিজিটালাইজেশন সেটা ভবিষ্যৎ আধুনিক বাংলাদেশকে এক ধাপ হলেও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আমাদের এই সামাজিক মাধ্যমের ইংরেজি শিক্ষক ইমাম হোসেন স্যার ও মুনজেরিন শহীদ ম্যাম এবং আমাদের ইংরেজি শেখা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাক।

আরও পড়ুন

Leave a Reply