Workaholism বা কর্মে আসক্তি  – আল শাহারিয়া

Workaholism হলো মানুষের এমন এক স্বভাব যার উপকারী এবং অপকারী উভয় দিকই বিদ্যমান। এর উপর নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারলে তা মানুষের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন করতে পারে।

Workaholism বলতে এমন এক অবস্থা বোঝানো হয় যাতে একজন ব্যক্তি সময় বিবেচনা না করেই কাজ করে থাকেন৷ এক্ষেত্রে ব্যক্তিটি সমস্ত মনোনিবেশ কাজের উপর রাখেন৷ এবং পারিপার্শ্বিক কোনোকিছুতেই মনোযোগ দিতে পারেন না।

এর উপকারী দিক হিসাবে দায়িত্ববোধ এবং নিজের কাজে অনড় থাকাকে বর্ণনা করা যায়।
আলস্য মানুষের উন্নতির পথে অন্যতম অন্তরায়। কিন্তু, এটি একদমই অলসতার বিপরীত স্বভাবের সাথে সম্পর্কিত।

Workaholism এর কারণ হিসাবে কর্ম-জীবনের চাপ, ব্যক্তিগত অভ্যাস ইত্যাদিকে দায়ী করা যায়।
কর্ম-জীবনে অনেকেরই সময়ের তুলনায় বেশি কাজ করতে হয়। যার ফলে ব্যক্তি পারিপার্শ্বিক অনেক ব্যাপারেই মনোযোগ দিতে পারে না৷ এছাড়া ব্যক্তিগত অভ্যাসের কারণে, নিজেকে উন্নত করার আকাঙ্ক্ষায় workaholism মানুষের অভ্যাসে পরিণত হতে পারে৷

ছবি: সানোয়ার হোসেন শান্ত

ব্যক্তিগত জীবনে শারিরীক ও মানসিকভাবে workaholism এর কিছু প্রভাব প্রতীয়মান হয়।
দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে শারীরিক সমস্যা হতে পারে। কর্ম-জীবনের কাজের জন্য অপর্যাপ্ত সময় থাকলে তার ফলে শারিরীক অসঙ্গতি এবং দুশ্চিন্তা হতে পারে।
এটি ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষভাবে উদ্বিগ্নতা, ডিপ্রেশন ইত্যাদি ব্যক্তির মনে সর্বদা বিরাজ করে। এর ফলে ব্যক্তির সাথে পরিবার ও সামাজিক জীবনের একটি বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে, ব্যক্তি নিঃসঙ্গ বোধ করে।

এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সুষম সময়-পরিকল্পনা প্রয়োজন। নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী কাজ নির্বাচন এবং সময়ের ব্যাপারে পূর্ব ধারণা রাখতে পারলেই কাজটি সঠিকভাবে করা সম্ভব। এছাড়া মানুষের সাথে সামাজিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পারলে workaholism পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

পরিশেষে, workaholism এমন একটি আলোচ্য বিষয় যার উপকারী এবং অপকারী উভয় দিক বিদ্যমান। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে একজন মানুষ সামগ্রিকভাবে উপকৃত হবে। তবে, নিয়ন্ত্রণ হারালে আনতে পারে একাধারে সামাজিক, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি। এজন্য আমাদের সুষম সময়-পরিকল্পনা, পরিপাটি জীবনযাপন এবং সামাজিক সু-সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে।

আল শাহারিয়া
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

Leave a Reply