চে গুয়েভারাঃ সভ্যতার আধুনিকতম বিপ্লবী – আল শাহারিয়া

বিপ্লবের সুষম উদাহরণ চে গুয়েভারা। তাকে নিয়ে জানার রয়েছে অনেককিছুই। সেসব কথাই লিখেছেন আল শাহারিয়া।

চে গুয়েভারা ছিলেন একজন আর্জেন্টিনীয় মার্কসবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ, সামরিক তত্ত্ববিদ এবং কিউবার বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্ব। তার পূর্ণ নাম হলোঃ এর্নেস্তো গুয়েভারা দে লা সের্না। তার জন্ম ১৯২৮ সালের ১৪ জুন আর্জেন্টিনার রোসারিওয়ায়। তিনি পেশায় ছিলেন একাধারে চিকিৎসক, লেখক, গেরিলা।তিনি একজন বিপ্লবী ছিলেন। তার বিভিন্ন উক্তি এখন-ও মানুষ হৃদয়ে ধারণ করে নিজেদের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তিনি ডাক্তারি পড়তে পড়তে লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেন।তখন ওই সব অঞ্চলের সর্বব্যাপী দারিদ্র্য তার মনে গভীর দাগ কেটে যায়। ওই ভ্রমণ সময়ের অর্জিত অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি এটা বুঝতে পারেন যে এই অঞ্চলে বদ্ধমূল অর্থনৈতিক বৈষম্যের স্বাভাবিক কারণ হল একচেটিয়া পুঁজিবাদ, নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ।তাই তিনি এই সমস্যার একমাত্র সমাধানের উপায় হিসাবে বিশ্ব বিপ্লবের কথা ভাবেন। ফলে তিনি রাষ্ট্রপতি জাকোবো আরবেনজ গুজমানের নেতৃত্বাধীন গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেন।

চে গুয়েভারা; ছবিঃ সংগৃহীত

তার সঙ্গে রাউল ও ফিদেল কাস্ত্রোর আলাপ হয় মেক্সিকো সিটিতে বসবাসের সময়। কিউবার বিপ্লবের পর গুয়েভারা নতুন সরকারে একাধিক দায়িত্ব পালন করেন। যেমন বিপ্লবী আদালতে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্তদের আপিল পুনর্বিবেচনা ও ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড প্রদান, কিউবার জাতীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও সামরিক বাহিনীর ইনস্ট্রাকশনাল ডিরেক্টরের ভূমিকা পালন,শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রী হিসেবে খামার সংস্কার আইন প্রবর্তন। বিভিন্ন জীবনী, স্মৃতিকথা, প্রবন্ধ, তথ্যচিত্র, গান ও চলচ্চিত্রে তার চরিত্রের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। টাইম পত্রিকার বিংশ শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকায় তার নাম প্রকাশিত হয়।আবার গেরিলেরো হেরোইকো নামে আলবের্তো কোর্দার তোলা চে-র বিখ্যাত ফটোগ্রাফটিকে “বিশ্বের সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ ফটোগ্রাফ” হিসেবে ঘোষিত।

তার দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী হলেন হিলডা গাডি (১৯৫৫-১৯৫৯) ও আলেইডা মার্চ (১৯৫৯-১৯৬৭)।এবং তার সন্তানেরা হলেন হিলডা (১৯৫৬-১৯৯৫), আলেইডা (জন্ম ১৯৬০), কামিলো (জন্ম ১৯৬২), সেলিয়া (জন্ম ১৯৬৩) ও এর্নেস্তো (জন্ম ১৯৬৫)।

তার পিতার নাম এর্নেস্তো গুয়েভারা লিঞ্চ এবং তার মাতার নাম সেলিয়া ডে লা সার্না।

তিনি ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর ৩৯ বছর বয়সে বলিভিয়া লা হিগুয়েরায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত হয়ে পরলোকে গমন করেন। মৃত্যুর পরেও তিনি যেন এক জীবন্ত সত্তা। তিনি এখন-ও যেকোনো জীবন্ত মানুষের চেয়েস জীবন্ত। তার চোখদুটো এখনোও যেন বিপ্লবের কথা বলে। তিনি তার জীবনে অনেক বই ও ডায়েরি লিখেছেন। আমাদের উচিৎ তার লেখা বই ও ডায়েরিগুলো পড়ে তার চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হওয়া।

আল শাহারিয়া (https://www.facebook.com/alsharia.09)
কবি, গীতিকার ও কন্টেন্ট রাইটার

Leave a Reply