‘মনে হলো এক টুকরো বেহেস্ত যেনো নেমে এসেছে পৃথিবীতে’

আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ত্রাণ কার্যক্রমে কচুর লতি বিক্রি করে এমন দুই শিশু এসেছিল। তালিকায় তাদের নাম না থাকায় তারা ত্রাণ পাবে কি-না সংশয়ে ছিল………………।

এই ঘটনা তুলে ধরেছিলেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবায়রত মাওলানা সাইমুম সাদী। এই ঘটনা শেয়ার করেছেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ নিজেই।

মনে হলো এক টুকরো বেহেস্ত যেনো নেমে এসেছে পৃথিবীতে

স্ট্যাটাস টি হুবহু নিচে দেয়া হলঃ

“ওরা দু বোন বাজারে কচুর লতি বিক্রি করে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ত্রাণ  বিতরণের লাইন থেকে দূরে দাড়িয়েছিলো। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিমের রেজাউল ভাই এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ত্রাণ নিবে কিনা? 

জানালো, তারা ছোট, লাইনে দাড়িয়েছিলো, ধাক্কা খেয়ে ভয়ে সরে এসেছে। বাড়িতে অসুস্থ পিতা বলে দিয়েছেন, ধাক্কাধাক্কিতে না যাওয়ার জন্য, প্রয়োজনে ত্রাণ না নিয়ে চলে আসার জন্য।

আমরা দেখলাম হাতে পলিথিনের প্যাকেটে কচুর লতি। জানলাম ওগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে যা পাবে তা দিয়ে খাবার কিনে ফিরবে দু বোন। জিজ্ঞেস করলাম, কত টাকা দিলে কচুর লতি খুশিমনে বিক্রি করবে? জানালো, পঞ্চাশ টাকা হলে তারা খুশি। আমরা বললাম, যদি পচিশ কেজি চালের বস্তা দেই, খুশি হবে? আনন্দে লাফিয়ে উঠলো ছোটো বোন।

বললো, সত্যি বলছেন তো?  আমাদের নাম তো তালিকায়  নেই। আমরা অবাক হলাম এত ছোট্ট মেয়ে কিভাবে কিভাবে তালিকা, ত্রাণ এসব বুঝতে পারে। অভাবের সংসারে বাচ্চারা অনেক কিছুই বুঝে যায়। ট্রাক থেকে এক বস্তা চাল এনে যখন বললাম, এটা তোমাদের জন্য,  বড়বোন আনন্দে কেদে ফেললো।  চোখ বেয়ে টপটপ করে ঝরতে লাগলো পানির ফোটা।

এবার সমস্যা হলো তাদের বাড়ি এখান থেকে তিন কিলোমিটার দূরে৷ এত ছোট্ট দুটি বাচ্চা মেয়ে এই বস্তা নিয়ে যাবে কিভাবে? অগত্যা দেলওয়ার ভাইয়ের প্রাডো গাড়িতে তুলে ওদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত  হলো। প্রাডো তে উঠার পর বললাম, চোখের পানি মুছে একটু হাসো। আমরা ছবি তুলবো। ছবি দেখে মানুষ তোমাদের জন্য দোয়া করবে৷

হাসলো দুজন। মনে হলো এক টুকরো বেহেস্ত যেনো নেমে এসেছে পৃথিবীতে। ওরা চলে গেছে। আমি কল্পনায় দেখছি, সামান্য এক বস্তা চাল একটা ফ্যামিলিতে আজ আনন্দের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে।”

আরও পড়ুন

Leave a Reply