ই-পাসপোর্ট কী এবং কীভাবে আবেদন করা যায়?

ই-পাসপোর্ট অধ্যায় বাংলাদেশে শুরু ২০২০ সালে। কিন্তু পুরো বাংলাদেশ কভার করতে ২০২১ সাল লেগে গেছে। এখন প্রায় এমআরপি পাসপোর্ট প্রিন্ট করা বন্ধের পর্যায়ে চলে এসেছে। আজ আমরা আলোচনা করবো এই ই পাসপোর্ট কী জিনিস এবং কীভাবে আমরা আবেদন করে হাতে পেতে পারি।

ই-পাসপোর্ট কী?

ই-পাসপোর্ট মানে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট। এই পাসপোর্টে একটা মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকে যেটাতে তথ্য গুলো সংরক্ষিত থাকে। এটি বায়োমেট্রিক পাসপোর্টও বটে। কারণ এটাতে ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ লাগে রেজিস্ট্রেশনের সময়। আগে ছিল এমআরপি অর্থাৎ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, এটা মেশিনে পাঠযোগ্য। বর্তমানে ১৫০রও অধিক দেশে এই পাসপোর্ট চালু হয়েছে।

এটাকে অনেক দেশে বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, ডিজিটাল পাসপোর্টও বলে। বিশ্বে সর্বপ্রথম মালয়েশিয়া ই পাসপোর্ট চালু করে।

ই-পাসপোর্ট
E-Passport Portal of Bangladesh

বাংলাদেশে ই-পাসপোর্টের ফিস

বাংলাদেশে ৫ বছর ও ১০ বছর মেয়াদী ই পাসপোর্ট দেয়া হয়। বাংলাদেশ তিন ধরনের পাসপোর্ট দেয়ঃ

  • কুটনৈতিক পাসপোর্ট
  • সরকারি পাসপোর্ট
  • সাধারণ পাসপোর্ট

পাসপোর্ট পাওয়ার উপর ভিত্তি করে তিন ভাবে দেওয়া হয়।

ধরনসময়কালবছরপৃষ্ঠাটাকা
রেগুলার ডেলিভারি১৫ কার্য দিবস/২১ দিন

১০
১০
৪৮
৬৪
৪৮
৬৪
৪০২৫/=
৬৩২৫/=
৫৭৫০/=
৮০৫০/=
এক্সপ্রেস ডেলিভারি৭ কার্য দিবস/১০ দিন

১০
১০
৪৮
৬৪
৪৮
৬৪
৬৩২৫/=
৮৬২৫/=
৮০৫০/=
১০৩৫০/=
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি২ কার্য দিবস

১০
১০
৪৮
৬৪
৪৮
৬৪
৮৬২৫/=
১২০৭৫/=
১০৩৫০/=
১৩৮০০/=

ই-পাসপোর্টে কীভাবে আবেদন করতে হয়?

  • আবেদন করতে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে।
  • এরপর Apply Online বাটনে প্রেস করলে আপনি একটা ফর্ম পাবেন।
  • ওখান থেকে আপনি কোথা থেকে আবেদন করছেন, আপনার বর্তমান ঠিকানার জেলা ও আপনার নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন নির্বাচন করুন।
  • তখন সয়ংক্রিয় ভাবে আপনি কোথা থেকে পাসপোর্ট করবেন, তা জানিয়ে দেয়া হবে।
  • এরপর Continue বাটনে প্রেস করলে আপনার ইমেইল চাওয়া হবে।
  • এখানে আপনাকে ঠিকঠাক ইমেইল দিতে হবে, যেকোন তথ্য পাসপোর্ট অফিস থেকে এই মেইলে পাঠানো হবে।
  • এরপর আপনি যে রোবট না সেটা প্রমাণ করে Continue বাটনে প্রেস করুন।
  • আপনি এখন নিচের মত ইন্টারফেস দেখতে পাবেন।
  • এই পাতাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে পুনরায় আপনার ইমেইল, পাসওয়ার্ড( যে পাসওয়ার্ড পরবর্তী লগইন এর জন্য লাগবে, এটা আপনি আপনার ইচ্ছেমত দিবেন এবং মনে রাখবেন), আপনার পুরো নাম(এনআইডি অনুযায়ী, যদি ১৮ এর নিচে হন তাহলে জন্ম সনদ অনুযায়ী দিতে হবে।
  • Given Name অপশনে আপনার নামের প্রথম অংশ দিবেন এবং Surname এ আপনার নামের শেষ অংশ টুকু দিতে হবে।
  • যদি আপনার নাম Mushfiqur Rahim হয় তবে Full Name=Mushfiqur Rahim, Given Name=Mushfiqur, Surname=Rahim এভাবে দিতে হবে। এরপর আপনার মোবাইল নাম্বার টা দিতে হবে।
  • কিন্তু আপনার নামে যদি কোন ডট থাকে, সেটা দেওয়া যাবে না। এটা না দিলে কোন সমস্যা নেই বরং দিলেই সমস্যা।
  • এখন Create Account এ প্রেস করে আপনার একাউন্ট তৈরি করুন।
  • প্রদত্ত ইমেইলে একটা কনফারিমেশন মেইল করা হবে। মেইল থেকে ইমেইল টি কনফার্ম করতে হবে।
  • এখন আপনি পোর্টালে ফিরে এসে লগইন করতে পারবেন।
  • লগইন করে আপনার তথ্য সমূহ খুব সুন্দর ভাবে পূরণ করবেন।
  • সকল অপশন পূরণ করার পর আবেদন কপি ও এপোয়েন্ট কপি ডাউনলোড করবেন এবং প্রিন্ট করবেন।

আঞ্চলিক পাসপোর্টে অফিসে গমন ও আবেদন জমা

আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার জন্যে একটা তারিখ ও সময় দেয়া হবে। অনেক সময় একটা শিডিউল দেয়া থাকে, সেই শিডিউল অনুযায়ী আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।

এর আগে আপনাকে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে পেমেন্ট স্লিপ সংগ্রহ করতে হবে।

পাসপোর্ট অফিসে আবেদন কপি, এপোয়েন্ট কপি, আপনার মূল এনআইডি কার্ড ও সরকারি ও কুটনীতিক পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে।

পুলিশ ভেরিফিকেশন

পাসপোর্টের প্রাথমিক আবেদন করার পর এবার পুলিশ ভেরিফিকেশনের পালা। আপনার আবেদন পত্র জমা দানের ৭-১০ দিনের মধ্যে পুলিশ থেকে ফোন করা হবে বা পুলিশ আপনার বাড়িতে যাবে ভেরিফিকেশনের জন্যে। আপনার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, নাগরিক/চারিত্রিক সনদ ও বিদ্যুৎ বিল/পানি বিল চাইতে পারে। এগুলো রেডি করে রাখতে হবে।

ই- পাসপোর্ট প্রদান

সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে এক মাসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন। আপনার ফোনে পাসপোর্ট এসে গেলে মেসেজ আসবে আবার অনেক সময় নাও আসতে পারে। এজন্য আপনাকে মাঝে মাঝে মেইল চেক করতে হবে।

আপনার ই-পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থান জানুন এখান থেকে

আরও পড়ুন

Leave a Reply